নিজস্ব প্রতিবেদক: ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এর আগে গত ৩০ মে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ জুন পর্যন্ত আপিল বিভাগ খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
৩০ জুন পর্যন্ত আপিল বিভাগ খোলা রাখার বিষয়ে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মাননীয় বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান মহোদয় আগামী ১৬, ২৩ ও ৩০ জুন তারিখে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে শুনানি গ্রহণ করবেন।’ ৯ জুন মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে আদালত বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে তালমিলিয়ে সারা দেশে আদালতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ক্রমেই সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ছে। এরইমধ্যে সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। গত ১০ মে নিম্ন আদালতের ভার্চুয়াল কোর্টে শুধু জামিন শুনানি করতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এরপর থেকে নিম্ন আদালতে ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন শুনানি শুরু হয়। তবে জরুরি প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১১ মে থেকে ভার্চুয়াল আদালত কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে শুধুমাত্র সীমিত আকারে নির্দিষ্ট কিছু আদালতে জামিন আবেদনের শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ৩০ মে’র পর আদালতের সংখ্যা ও এখতিয়ার বাড়ানো হয়েছে।
৩০ মে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ জুন পর্যন্ত ভার্চুয়াল আদালত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ওইদিন আপিল বিভাগ খোলা রাখার বিষয়ে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান মহোদয় আগামী ২ ও ৯ জুন তারিখে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে শুনানি গ্রহণ করবেন। এ অবস্থায় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের শুনানির সময় বাড়িয়ে ৩০ জুন নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করলো সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
এর আগে ভার্চুয়াল আদালত চালু করতে রাষ্ট্রপতিকে অধ্যাদেশ জারির জন্য অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করা হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে। এই আবেদন পাবার পর রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার আলোকে আইন মন্ত্রণালয় গত ৯ মে ভার্চুয়াল উপস্থিতিকে স্বশরীরে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য করে আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০ নামে গেজেট প্রকাশ করে। এই অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আদালতকে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়।
এর পরদিন ১০ মে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশে ভার্চুয়াল আদালত চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফুলকোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওইদিনই ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ এবং অধস্তন আদালতের জন্য আলাদা আলাদা ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ এবং আইনজীবীদের জন্য ‘ভার্চুয়াল কোর্ট রুম ম্যানুয়াল’ প্রকাশ করা হয়। এসব নিয়ম মেনেই সারা দেশে আদালত পরিচালিত হচ্ছে।